Posts

Showing posts from August, 2017

নূরের শহরে (৪) - রহমতে, বৃষ্টিতে, অশ্রুতে ভিজে

আল্লাহর ঘরের নিমন্ত্রণ পাওয়া, তাঁর ঘরেরতাওয়াফের তৌফিক পাওয়া, তাঁর হাবিবের সামনে দাঁড়াতে পারা এমনিতেই ছিল আমার জন্য হঠাৎ পাওয়া অবিস্বাশ্য নিয়ামত, তার উপরে আবার আল্লাহ আমাকে নিয়েছেন বাবা মায়ের সাথে, সুযোগ দিয়েছেন তাদের কিছু খেদমত করার। একদিকে আল্লাহর গুনাহগার বান্দা, অপরদিকে বাবা মায়ের হক আদায়ে ব্যর্থ সন্তান, তারপরেও এতবড় দান আল্লাহর তরফ থেকে, এতো ভালোবাসা বাবা মায়ের কাছ থেকে! কেবল উনাদের থেকেই আসলে আশা করা যায়! তো এই সফরে বাবা মা যখন মসজিদে যেতেন, বা বাইরে কোনো কাজে, সাথে সাথেই থাকতাম। খাবারের সময় খুঁজে খুঁজে মনমতো খাবার নিয়ে আসতাম হোটেলে। তবে সকালের দিকে বা দুপুরের পরে, যখনিই তারা বিশ্রাম নিতেন, আমি ফুড়ুৎ করে প্রায় উড়ে চলে যেতাম নবীর মসজিদে! হোটেল থেকে নামলেই মসজিদে নববী, ইশ কত খুশির সময় ছিল! এ সময়গুলো আমি চড়ে বেড়াতাম প্রিয় নবীর মসজিদের জমিনে। কিছুটা দ্বীনি শিক্ষা বা উপলব্ধি যাদেরকে আল্লাহ দিয়েছেন, তারা এই মসজিদের মর্যাদা বুঝেন। আরেকটু যারা আগে বেড়েছেন আল্লাহর দিকে, তারা টের পান এই মসজিদের নূর, এখানের রুহানিয়াত। অদৃশ্য জগতের আয়োজন সবার চোখে না পড়লেও, এখানের বাহ্যিক সাজসজ্জা চোখ এড়াব

নূরের শহরে (৩) - আল্লাহর দুই বান্দা

মাসজিদুল হারাম আর মাসজিদে নববী। আল্লাহর আশিক যারা, আল্লাহর সন্তুষ্টি যারা খুঁজে ফেরেন, আল্লাহর হুকুমের যারা পাবন্দ, নবীর সুন্নাতের যারা অনুসারী; আল্লাহর প্রতি, আল্লাহর প্রিয় নবীর প্রতি ভালোবাসা যাদের অন্তরে বদ্ধমূল, পৃথিবীর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এমন বান্দারা প্রতিনিয়ত ছুটে আসেন এই পবিত্র জমিনে। এই দুই শহরের আলো বাতাসে, এই দুই মাসজিদের ছায়ায় আসতে না পারলে তাদের যেন দম বন্ধ হয়ে আসে। অনেক বোকারা ভাবে, হজ্ব তো ফরজ একেবারই, এতবার যাওয়ার কি আছে? যিয়ারতের জন্য তো একদিনই যথেষ্ট, এতদিন মদিনায় কি দরকার? যাদের অন্তরে আল্লাহর মহব্বত নেই, যাদের কাছে ইসলাম মানে শুধুই কিছু নিয়মতান্ত্রিক কাজ, যেগুলো নিতান্ত বাধ্য হয়ে করতে হয়, তারা কী বুঝবে কাবার দিকে তাকিয়ে থাকার আনন্দ? যাদের কাছে নবীজি কেবলই একজন বার্তা বাহক, যাদের অন্তরে নেই আমাদের প্রিয় নবীর ভালোবাসা, নেই তাঁকে দেখার তামান্না, তারা কী বুঝবে যিয়ারতের জন্য ধীর পায়ে হেটে যাওয়ার সময় মনের অবস্থা? তাদের দিলে এসবের কোনো প্রভাব নেই। কিন্তু যাদের দিলকে আল্লাহ তাঁর নিজ রহমতে সজীব রেখেছেন, সেখানে ঢেলেছেন তাঁর মহব্বত, তাঁর হাবিবের মহব্বত, তারা তো এখানে আসবেই! বার ব

নূরের শহরে (২) - উপহারের রাত

আমাদের হোটেলটা ছিল একেবারে মসজিদে নববীর চত্বর ঘেঁষে। মধ্যরাতের পর যখন পৌঁছলাম, এশার নামাজ তখনও বাকি আমাদের। সবাই খুব দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নেমে এলাম। মদিনার ঠান্ডা ঠান্ডা রাতের আবহাওয়ায় এসে দাঁড়ালাম মসজিদের বাইরের সাদা চত্বরে। কতদিন পর আল্লাহ আবার নিয়ে এলেন। ১৫ বছর আগে, তখন আমি ক্লাস টেনে পড়ি, বাবা মা সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন আমাদের ৩ ভাই বোনকে। সেই দিনগুলোর কথা ভাবলেই খুব মনে পড়তো এই শুভ্র, শান্তিময় খোলা চত্বরটার কথা। আবারও বাবা মায়ের হাত ধরেই এলাম এবার। আলহামদুলিল্লাহ। এই নিয়ামত আল্লাহ আরও অনেক অনেক বাড়িয়ে দিন। আমিন। আমাদের ছোট জামাতটার ইমাম হয়ে নামাজ পড়ালাম। হুজুর হুজুর দেখতে হওয়ার কারণে, আর কয়েক পারা মুখস্ত থাকায় প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় নামাজ পড়াতে হয়। এমনকি ঢাকার এক মসজিদেও একবার ফজরের নামাজ পড়ানোর তৌফিক হয়েছিল, কোনো এক ৩ দিনের জামাতে থাকার সময়! কিন্তু এবারের এই নামাজ পড়ানোটাই আমার কাছে সবচেয়ে স্পেশাল ছিল, কারণ এবার দাঁড়িয়ে আছি মসজিদে নবনীর দেয়াল ঘেঁষে! তবে খুশির সাথে ভয়টাই বেশি ছিল সেই সময়। দাঁড়িয়ে আছি কোথায়! এই জায়গায় নামাজ পড়ানো কি, নামাজ পড়তেই তো বুক কাঁপার কথা আমার মতো মানুষের। ম